• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

শেখ হাসিনার মূল লক্ষ্য বঙ্গবন্ধু অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা নীলফামারী

লালমনিরহাট বার্তা

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০১৮  

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, বঙ্গবন্ধু অঙ্গীকার ছিল গরীব দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফুটানো। তাঁর সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে জননেত্রী শেখ হাসিনা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত নিরলসভাবে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তাঁর নিজের জীবনের চাওয়া পাওয়ার আর কিছুই নাই। জাতির পিতার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করাই তাঁর মূল লক্ষ্য। আজ শনিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারীতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে “ধর্ম-জ্ঞান বিকাশের অন্তরায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরনায় আলেম সমাজের করণীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, জঙ্গীবাদ এবং সন্ত্রাসের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। একটি অপশক্তি ধর্মকে ব্যবহার করে জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করে শান্তির ধর্ম ইসলামের ক্ষতি করছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ। মন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি জামায়াতের সময় জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটে। এর নেপথ্যে ছিলো মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি জামায়াত। বাংলাদেশকে মনে প্রাণে গ্রহণ করতে না পেরে নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে তারা। নূর বলেন, ওই দুষ্টচক্রটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৮ বার হত্যার চেষ্টা করেছিল। সৃস্টিকর্তা তাকে রক্ষা করেছেন। কারন তিনি গরীব দুঃখী মানুষের সেবা করেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন, এটাই তাঁর অপরাধ।

নূর বিভ্রান্তি তথ্য রটানোর ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে উপস্থিত আলেমদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে বেহস্ত পাওয়া যায়, এবার তো দাঁড়িপাল্লা নেই তাহলে কি ধানের শীষে ভোট দিয়ে বেহস্ত পাওয়া যাবে। দেলোয়ার হোসেইন সাইদীকে চাঁদে দেখিয়ে সাধারন মানুষের মাঝে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে ছিল। এরা কারা আসলে কি মুসলামান? রসুল করিম (সঃ)কে তো কোনদিন চাঁদে দেখা গেলনা। মন্ত্রী বলেন, চারদলীয় জোটের সরকারের সময় জামায়াত নেতারা ধর্মমন্ত্রানালয় কোন মন্ত্রীত্ব নেন নাই। কিন্ত তারা কৃষিমন্ত্রী, সমাজকল্যানমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রীর এসব মন্ত্রনালয়ের পদ বা দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কারন তারা ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য কাজ করেনি। আর আজ দেশে পাঁচশত ৬০টি মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে এটাই প্রথম। কওমী মাদ্রসার শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। দেশে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী করতে পরবে। এটা হলো শেখ হাসিনার সরকার।

মন্ত্রী বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ৭টি সাধারণ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড রয়েছে। কওম আরবি শব্দ। এর অর্থ গোষ্ঠী,গোত্র,জাতি,সম্প্রদায়,জনগণ। কওমি অর্থ হলো গোত্রীয়,জাতীয়,জনগণ সম্পর্কিত। মাদ্রাসাও আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে অধ্যয়নের স্থান,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্কুল। সুতরাং ‘কওমি মাদ্রাসা’ এর মানে হলো জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা জাতীয় বিদ্যাপীঠ। আর এই বিদ্যাপীঠে শিক্ষার্থীরা সঠিক ইসলাম শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে তার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। মন্ত্রী আরো বলেন, নারী নেতৃত্ব বলে হারাম। আপনার ইসলামের দৃষ্টিতে বলেন, কোথায় এটি লেখা আছে নারী নেতৃত্ব হারাম। ইসলামের দৃষ্টিতে নারী নেতৃত্ব হারাম নয়। কারন রসুল্লার(সঃ) আমলে নারীরা ঘোড়ার পিঠে উঠে যুদ্ধ করেছিল। নারী নেতৃত্ব হারাম, এই হাদিশ তাদের তৈরী। এটাই মোটেই সমচিত নয়। এই চিন্তা-চেতনা পরিবর্তন করতে হবে।

ইসলাম রক্ষায় সরকারের কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, টঙ্গির মাঠে তাবলীগ জামায়তের জায়গা করে দিয়েছিলেন। ইমামদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনে মসজিদ ভিত্তিক পাঠাগারের শিক্ষকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইসলামী ফাউন্ডেশন নীলফামারী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. এরফান আলীর সভাপতিত্বে মতিবিনময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মমতাজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রশিদ মঞ্জু, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুজার রহমান, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মুসফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

কার্যালয়ের মাস্টার ট্রেইনার শামিমুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মশিউর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফিরোজ আলম, জাতীয় ইমাম সমিতি নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি গোলাম মোস্তফা, নীলফামারী বড় মসজিদের ইমাম আলহাজ্ব মাওলানা আশরাফুল হক নূরী ও মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (মউশিক) ও রামনগর প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের শিক্ষক তফুরা খাতুন।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –