• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

শীতের শরীর!

লালমনিরহাট বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৮  

মানুষের মৃত্যুর হার গ্রীষ্মপ্রধান দেশ থেকে শীত প্রধান দেশে বেশি হয়ে থাকে।২০০৪ সালে ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের কুইন মেরি স্কুল অব মেডিসিন এন্ড ডেন্টিস্ট্রির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শীতজনিত কারণে মৃত্যুহার গরমজনিত মৃত্যুহার থেকে বেশি। বিশেষ করে গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে শীতকালে এই হারটা আরো বেশি।কারণ গরমের দেশগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই শীতের বিরুদ্ধে দেহের লড়াইয়ের ক্ষমতা কম থাকে। যেমন সুইডেন শীতপ্রধান দেশ, সেখানে শীতের কারণে মৃত্যুর হার তিন দশমিক নয় শতাংশ। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়া গ্রীষ্মপ্রধান দেশ, শীতের কারণে এই হার ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ।

 

1.শীতের শরীর!

ঠাণ্ডাজনিত মৃত্যুর প্রায় অর্ধেক হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকে হয়। শীতের প্রকোপে শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। বেড়ে যায় লোহিত রক্তকণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা, অনুচক্রিকা ও ফিব্রিনোজনের পরিমাণ। ফলে ঘন হতে শুরু করে রক্ত। এতে রক্তের চাপ অনেক বেড়ে যায়, যা হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মূল কারণ।শীতকালে সকলেই গুটিসুটি হয়ে একসঙ্গে থাকতে পছন্দ করে। যার ফলে সর্দি কাশির জীবাণুগুলো একজন থেকে আরেকজনের কাছে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আবার ঘরগুলোও থাকে বদ্ধ। ঘরের মধ্যে তাই দীর্ঘ সময় জীবাণুগুলো থাকার সুযোগ পায়। গ্রীষ্মে বাতাস চলাচল করতে পারে, বাতাসের সঙ্গে জীবাণুরা তাই বেরিয়ে যেতে পারে। এসব জীবাণুর কারণে নিউমোনিয়া পর্যন্ত হতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন ফুসফুসজনিত রোগ, অ্যাজমা এবং স্মৃতিভ্রম তো আছেই।

শীত প্রধান দেশে তুষারপাতের কারণে মৃত্যুর হারটাও কিন্তু লক্ষ্যণীয়। দরজা জানালা অনেক দিন বন্ধ রাখায় আছে আরেক বিপদ, বাতাসে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে, এটা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।আমাদের দেহের অত্যানুকূল তাপমাত্রা প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতকালে তা কিছুটা কমে যায়। ফলে কিছুটা নাজুক হয়ে পড়ে আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এই সুযোগটাই নেয় ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া,তখন তারা শরীরে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে।

ভাইরাস সাধারণত শুষ্ক এবং ঠান্ডা পরিবেশ পছন্দ করে। ঠান্ডাজনিত রোগের জন্য মূলত দায়ী রাইনোভাইরাস, করোনাভাইরাস এবং প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা। এসব ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে কোষের মধ্যে অবস্থান করে। তারপর ভাইরাসগুলো প্রচুর পরিমাণে বংশবৃদ্ধি করে। এক পর্যায়ে সেই কোষটি ফেটে যায়। নতুন তৈরি হওয়া ভাইরাসগুলো শরীরের অন্য কোষগুলোকে আক্রমণ করে। বংশবৃদ্ধির ফলে সে কোষগুলোও ফেটে যায়। এভাবে প্রক্রিয়া চলতে থাকে।নষ্ট হতে থাকে শরীরের কোষগুলো যার ফলে আমরা অসুস্থ অনুভব করি।

মনে রাখা জরুরি অ্যান্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগকে সারায়, ভাইরাসজনিত রোগ নয়।তাই সর্দি-কাশি জনিত অসুখের কারণে এন্টিবায়োটিক খেলে কোনো ফলাফল পাওয়া যাবে না!বোঝাই যাচ্ছে শীতকালের দুর্দশা এড়াতে একটু সচেতন হতে হবে। সর্দি কাশি জনিত সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সর্বোপরি এই সময়ে জীবনযাপন আনন্দময় করে তুলতে হলে নিজ শরীরের ভালোভাবে পরিচর্যা করতে হবে।

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –