ইপিজেডে ট্রেন ইউনিয়নে আর বাধা নেই

দেশের ইপিজিডগুলোতে ট্রেড ইউনিয়ন করার বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন-২০১৮’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ফলে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কাঠামোসহ তাদের বিভিন্ন অধিকার বাস্তবায়নের বিষয়টির আইনগত বৈধতা নিশ্চিত হলো।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর চাপের মুখে এই আইনটিকে অবশেষে কার্যকরের পথে এগিয়ে নিচ্ছে সরকার।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রায় তেরো বছর যাবৎ আইনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভার আজকের বৈঠকে এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হলো। ফলে দেশের ইপিজেডগুলোতে ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিক কল্যাণ সমিতি গঠনের পথ সুগম হলো।

এ প্রসঙ্গে তিনি তিনি আরো বলেন, শ্রম আইন-২০০৬, আইএলও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার সঙ্গে পরামর্শের পর সমন্বয় করে এই আইনটি করা হয়েছে।

আইনের বিধান উল্লেখ করে শফিউল আলম বলেন, এই আইনের মূল বিষয় হলো- শ্রমিকদের ২০ শতাংশ সম্মতি দিলেই শ্রমিক সংঘ করা যাবে; বেপজার পাশাপাশি শ্রম পরিদফতরের পরিদর্শকরাও কারখানা পরিদর্শন করতে পারবেন। আগে শুধু বেপজার পরামর্শকরাই ইপিজেডের কারখানা পরিদর্শন করতে পারতেন। এছাড়া ইপিজেডের অভ্যন্তরে স্থাপিত শিল্প কারখানায় শ্রমিকদের কোনো দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে ধর্মঘট বা আন্দোলন-সংগ্রাম করার প্রয়োজন হলে দুই-তৃতীয়াংশ শ্রমিকের সম্মতি থাকলেই চলবে। এর আগে আরো বেশি শ্রমিকের সম্মতি লাগতো।

আরো রয়েছে- কারখানায় চাকরি করা অবস্থায় কোনো শ্রমিকের ৬০ বছর পূর্ণ হলে, তার চাকরি জীবনের প্রতি বছরের জন্য ৪৫ দিনের বেতনের হিসাবে টাকা পাবেন। আগে শ্রমিকরা এখানে ৩০ দিনের বেতনের সমান টাকা পেতেন।

এর আগে কয়েক বছর ধরে আইনটি নিয়ে নড়াচড়া করলেও জাতীয় সংসদে তা অনুমোদন পায়নি। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন-২০১৬ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ওই দিন অনুমোদিত আইনে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য স্থায়ী মজুরি বোর্ড প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়। অনুমোদিত আইনে ১৬টি অধ্যায় এবং ২০২টি ধারা ছিল।

বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠক ছিলো আজ। এটি বর্তমান সরকারের ২০৩তম বৈঠক। একইসঙ্গে এটি এ বছরের ৩০তম বৈঠক।