• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

পণ্যের বদলে বিক্রি হয় মুদ্রা

লালমনিরহাট বার্তা

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৮  

স্বাধীনতা অর্জন করা যে কোনো পরাধীন জাতির পক্ষে অত্যন্ত কঠিন। অন্যদিকে, স্বাধীনতা অর্জিত হলে তা রক্ষা করা আরো কঠিন। আবার স্বাধীনতা অর্জিত হলেও তা চিরস্থায়ী হয় না। এই কথাগুলোর সত্যতা সোমালিল্যান্ডের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা পেয়েও যারা আজও তারা পরাধীন। তাই দিন দিন তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা তীব্র সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাজারে পণ্যের বদলে বিক্রি হচ্ছে মুদ্রা! অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, সেখানে বিক্রি হচ্ছে আসল টাকা। খোলা রাস্তায় দিন-দুপুরে ক্রেতারা বিনিময় করে নিয়ে যায় রাশি রাশি নোট। তবে সে গল্প নিয়ে আলোচনায় যাওয়ার আগে জেনে নিন দেশটি সম্পর্কিত আরো বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য।

 

1.পণ্যের বদলে বিক্রি হয় মুদ্রা!

১৯৯১ সাল। অনেক সংগ্রামের পর সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারকে পতন করে নিজেদের অঞ্চলকে স্বাধীন ঘোষণা করে সোমালিল্যান্ড। সে বছরই তারা নিজস্ব সরকার ও সংবিধান গঠন করে। তাদের নিজস্ব সেনাবাহিনী ও পুলিশ ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে পৃথিবীর কোনো দেশই সোমালিল্যান্ডকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। অথচ সোমালিল্যান্ড শান্তিপূর্ণ একটি দেশ। সোমালিয়ার মতো এখানে নেই কোনো জলদস্যু সমস্যা এবং অভ্যন্তরীণ গোলযোগ। আয়তনের দিক থেকে দেশটি বাংলাদেশের চেয়ে খানিকটা ছোট, কিন্তু তাদের জনসংখ্যা মাত্র ৪২ লাখ। এর বেশিরভাগ মানুষই ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

 

2.পণ্যের বদলে বিক্রি হয় মুদ্রা!

এই দেশের খাদ্যের অভাব চরমে গিয়ে ঠেকেছে। পানির জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্ট করতে হয় তাদের।পানির কষ্ট যে কত দুর্বিষহ তা সোমালিল্যান্ডের মরুভূমির গ্রামের মানুষদের না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। এক গ্লাস পানি ঢালতে আমরা যে পরিমাণ নষ্ট করি সেই একই পরিমাণ পানির জন্য জীবন চলে যাচ্ছে এর নাগরিকদের। মরুভূমির গ্রামে গ্রামে পানির হাহাকার দেখে মনে হয় এ যেন কারবালার প্রান্তর।পানির খোঁজে বাপ-দাদার ভিটেমাটি, সহায়সম্বল ফেলে মরুভূমিতে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে গ্রাম থেকে গ্রামে ছুটে চলেন তারা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, একগ্লাস পানি কিনতে তাদের খরচ করতে হয় আধা ‍কেজি টাকা!

 

3.পণ্যের বদলে বিক্রি হয় মুদ্রা!

দেশটিতে টাকার বাজার গড়ে ওঠার নেপথ্যে তাদের আর্থিক কাঠামোই দায়ী। এখানকার মুদ্রাকে বলা হয় ‘শিলিং’। শিলিংয়ের দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ২০০০ সালে এক ডলারের দাম ছিল ১০ হাজার শিলিংয়ের কাছাকাছি। ২০১৭ সালেও প্রথম দিকে ৯ হাজার শিলিংয়ের সমান ছিল এক ডলার। বর্তমানে ডলার বা ইউরোর নিরিখে সামান্য খরচ করলেই পাওয়া যায় কয়েক কেজি টাকার নোট! যা নিতে বস্তা বা ঠেলাগাড়ির প্রয়োজন হয়।এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রী কিনতে গেলেও টাকার বস্তা নিয়ে বের হতে হয়।

 

4.পণ্যের বদলে বিক্রি হয় মুদ্রা!

শিলিংয়ের এমন মূল্যহীনতার কারণেই সোমালিল্যান্ডের টাকার গুরুত্ব ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। টাকার দাম এখানে এতই কম যে, এই বাজারে কোনো নিরাপত্তা নেই! এমনকি ছিনতাইকারী, চোর বা ডাকাতও চুরি করতে আগ্রহ দেখায় না!

– লালমনিরহাট বার্তা নিউজ ডেস্ক –