কিংবদন্তি নির্মাতা আমজাদ হোসেনের চিকিৎসা চলছে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ব্যাংকক নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে আছেন তার দুই ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান।আমজাদ হোসেনের বর্তমান অবস্থা জানিয়ে বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ছোট ছেলে নির্মাতা সোহেল আরমান একটি পোস্ট দিয়েছেন।সেখানে তিনি লিখেছেন, পরম যত্নের আর সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিকমানের চিকিৎসা পাচ্ছেন বাবা। সন্তান হয়ে এটাই চেয়েছিলাম। বাবার নিঃশ্বাস যতক্ষণ থাকবে উনি যেন সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসাটিই পান। সেই চাওয়াটা পূর্ণ হয়েছে। বামরুনগ্রাদে আইসিইউ এর আশেপাশে আমি আর বড় ভাইয়া তীর্থের কাকের মতো বসে আছি। ঘুমহীন দুই ভাই। খুব কষ্টের অপেক্ষায় কখন ডাক্তার এসে বাবাকে নিয়ে আশার বাণী দেবেন। সন্ধ্যার দিকে এক মেডিকেল ছাত্রী বাবাকে দেখে এসে আমাকে বললেন, আপনার বাবার হৃদ স্পন্দন ভালো। তার জোরেই নাকি বাবা এখনো অনেক গুরতর ধকল সইতে পারছেন।

সোহেল আরমান আরো লিখেন, আমি মনে মনে বলি বাবার ‍হৃদয়তো অনেক শক্তিশালী হবেই। কারণ তার হৃদয় অনেক বড়। আকাশের চেয়েও বড়। এই হৃদয় দিয়েই সবাইকে অকৃপণভাবে উজাড় করে ভালোবেসেছেন আর তার অনবদ্য শিল্পকর্মগুলো সৃষ্টি করেছেন। তাই বাবার হৃদয়টাই মৃত্যুর কাছে হার মানতে চাইছে না। এখনো খুব দূর থেকে হলেও আলো জ্বালছে। আশার বাণী পাঠাচ্ছে। বাবা তোমাকেও সবাই ভালোবাসে। অপেক্ষায় আছে।দোয়া পড়ছে। আশার আলো দেখছে। বাংলাদেশ থেকে এই বিদেশের মাটিতে হাসপাতালের প্রতিটি মানুষ যারা বাবার চিকিৎসায় নিয়োজিত কেউ চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছেন না। তাদের সবার কাছেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

তিনি লেখেন, বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য থাকলো হৃদয়ের গভীর থেকে কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। আপনার জন্যই সফল হয়েছে বাবার জন্য বিদেশে সর্বোচ্চমানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা। বাকিটা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা। এখন রাত হয়ে গেছে। হাসপাতালের জানালা দিয়ে আকাশের তারা দেখি; সময় কাটছে না, তোমার অপেক্ষায় আছি বাবা।

গেল ১৮ নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন আমজাদ হোসেন। পরে তাকে রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে। আমজাদ হোসেনের উন্নত চিকিৎসার খরচ বাবদ ২০ লাখ টাকা এবং এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া বাবদ ২২ লাখ টাকা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।